এশীয় কোম্পানিগুলোর মিয়ানমারে বাজার দখলের চেষ্টা

এশীয় কোম্পানিগুলোর মিয়ানমারে বাজার দখলের চেষ্টা

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকায় মিয়ানমার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে অনেক ইউরোপীয় কোম্পানি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে ভোক্তাপণ্য খাতে সৃষ্ট সে শূন্যতা পূরণে এশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। মিয়ানমারের সঙ্গে চীন, থাইল্যান্ড ও জাপানের মতো দেশগুলোর সম্পর্ক স্থিতিশীল থাকার কারণে নেপিদোতে বেড়েছে এসব দেশের বাণিজ্যিক তৎপরতা।

২০২১ সালের শুরুর দিকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত মিয়ানমার ৫৪০ কোটি ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে চীন ও হংকংয়ের বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০০ কোটি ডলার, যা মোট বিনিয়োগের ৫৫ শতাংশ।

চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে বাড়ছে বাণিজ্যিক সম্পর্ক। চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে ভারত সাগর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। বিশেষ করে রেল ও বন্দর প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে চীনা কোম্পানিগুলো এগিয়ে রয়েছে। চীনের ইউনিয়ন রিসোর্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইউনান এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট মিয়ানমারের দক্ষিণ অঞ্চলে ২৫০ কোটি ডলারের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে উচ্চক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে ২০২৭ সাল থেকে।

মহামারীর কারণে চীনের নেয়া ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ অনেকটা গতি হারিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারে চীনের উপস্থিতি কমেনি। মিয়ানমারের তৈরি পোশাক শিল্পে চীনের উপস্থিতি সবচেয়ে স্পষ্ট। সেখানে চীনা মালিকানাধীন কারখানাও রয়েছে। সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমে সম্প্রসারিত হয়েছে। মিয়ানমারে বর্তমানে তিন শতাধিক চীনা পোশাক শিল্প-কারখানা রয়েছে।

থাই কোম্পানিগুলোও মিয়ানমারের বাণিজ্যিক শূন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছে। পানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা বাড়াচ্ছে। পানীয় কোম্পানি ফ্রেজার অ্যান্ড নিয়াভ কেবল জুলাইয়েই ১ কোটি ৪১ লাখ ডলার ব্যয় করেছে মিয়ানমারে অ্যালকোহলের লাইসেন্স ও ভূমি ব্যবস্থাপনা ইস্যুতে। স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে অন্য প্রতিষ্ঠান এফঅ্যান্ডএন।

থাই জ্বালানি কোম্পানিগুলোও ঝুঁকে পড়ছে মিয়ানমারের দিকে। পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলো চলে যাওয়ার পর জায়গা দখল করে নিচ্ছে তারা। ফরাসি কোম্পানি টোটাল এনার্জি মিয়ানমারের বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র ত্যাগ করার পর তার স্থান দখল করে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পিটিটি এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন। জাপানের বেভারেজ কোম্পানি কিরিন হোল্ডিংস এবং ইনোস মিয়ানমার থেকে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখনো অন্তত ৪০০ জাপানি প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারে ব্যবসা করে যাচ্ছে। জাপান ও মিয়ানমার ঐতিহাসিকভাবেই মিত্রতার সম্পর্কে আবদ্ধ। মিৎসুবিশি করপোরেশন ও মিৎসুবিশি এস্টেট তাদের কার্যক্রম বাড়িয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে টয়োটা মোটর কার্যক্রম শুরু করেছে দেশটিতে।

নানা সমালোচনার পরও মিয়ানমারে এশীয় কোম্পানিগুলোর এমন উত্থান দেশটির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণ করে দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়া

আরও পড়তে পারেন

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কক্সবাজারে নতুন করে আরও প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা…
জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

ঈদুল আজহার আগেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে নতুন ডিজাইনের টাকার নোট, যা দুই টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা মূল্যমান পর্যন্ত…
পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

সৌদি আরব হজ পারমিট সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যারা বৈধ…