
কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা, নিহত অন্তত ২৪
- আন্তর্জাতিক
- এপ্রিল ২৩, ২০২৫
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় অন্তত ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এবং বার্তা সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে দুজন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন—একজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের এবং অপরজন নেপালের। ভারতীয় নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
হামলাটি ঘটে মঙ্গলবার বিকেলে, পেহেলগামের শান্ত, পাহাড়ঘেরা পরিবেশ যখন পর্যটকে ভরপুর ছিল। ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত এই পাহাড়ি শহর বহুদিন ধরেই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় এক গন্তব্য। তবে এই নির্মম হামলা মুহূর্তেই বদলে দেয় চিত্র।
কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ একে সাম্প্রতিক সময়ে বেসামরিকদের ওপর হওয়া সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।
২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এই ঘটনাকে কাশ্মীর অঞ্চলে সবচেয়ে মারাত্মক বলে মনে করা হচ্ছে। হামলার পেছনে কারা রয়েছে, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আমাদের সংকল্প অটুট রয়েছে এবং এটা আরও শক্তিশালী হবে।’
এই হামলার পর নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে মঙ্গলবার রাতেই দেশে ফিরছেন বলে পিটিআই জানিয়েছে। হামলার পর কাশ্মীরে গেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কাশ্মীরের শ্রীনগরে গিয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
হামলার পর ঘটনাস্থল পেহেলগাম এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে ওই অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা জানিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়, এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এই ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিষয়টি রয়টার্সের পক্ষ থেকে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ভারতের বিভিন্ন সংবামাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ভারতীয় সেনারা ঘটনাস্থলের দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মাটিতে অনেকের দেহ পড়ে আছে এবং লোকজন কান্না করছে ও সাহায্য চাইছে। অবশ্য বিবিসি এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ অনেক পর্যটককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুরো এলাকা সেনাসদস্যরা ঘিরে রেখেছেন এবং চৌকিগুলোতে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে আরেকটি অভিযানের প্রস্তুতি চলছে।