
কুমিল্লা ইপিজেডের রফতানিতে নতুন মাইলফলক
- অর্থনীতি
- ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৫
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুন-জানুয়ারি) কুমিল্লা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) পণ্য রফতানিতে নতুন রেকর্ড গড়েছে। এ সময় ইপিজেড থেকে ৬১৬.৫০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা করছেন, অর্থবছরের বাকি পাঁচ মাসে রফতানির পরিমাণ এক হাজার মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
কুমিল্লা ইপিজেড ২০০০ সালে দক্ষিণ চর্থা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এখানে ৪৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এবং কর্মরত রয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। গত তিন অর্থবছরে ইপিজেড থেকে মোট ২,৯৩৩.৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। চলতি বছরের প্রবৃদ্ধি সেই পরিসংখ্যানকে ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
চলতি বছর রফতানি বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, ‘কুমিল্লা ইপিজেডে প্রতিনিয়ত কোটি ডলারের পণ্য রফতানির বিষয় থাকে। এতে একজন রফতানিকারক ভাগ্য বদলে দিতে পারেন। আবার কোনও একটি ছোট দুর্ঘটনা যেকোনো পরিস্থিতিকে বদলে দিতে পারে। যেমন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। যা এখনও চলছে। তবে কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় আমাদের রফতানি বেড়েছে। কিন্তু রফতানির খাত বাড়েনি। আগে যারা আমাদের পণ্য নিতেন এখনও তারাই নিচ্ছেন, তবে পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রে ৯৫ শতাংশ পণ্য রফতানি হয়। এর মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, স্পেন, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, ক্রোয়েশিয়া, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইডেন, হাঙ্গেরিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। তবে রফতানি বেশি হয় জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে।
বিনিয়োগে শীর্ষে আছে অন্তত ১৫টি দেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তাইওয়ান, কানাডা, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের বিনিয়োগ আছে কুমিল্লা ইপিজেডে।
উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে, গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ, সোয়েটার, ফেব্রিক্স, টেক্সটাইল ডাইজ অ্যান্ড অক্সিলিয়ারিজ, ইলেকট্রনিকস পার্টস, এলিমেনেটিং ব্রাশ, ফুটওয়্যার ও ফুটওয়্যার অ্যাপারেলস, ক্যামেরা কেস, ব্যাগ, ইয়ার্ন, প্লাস্টিক পণ্য, হেয়ার ও ফ্যাশন অ্যাকসেসারিজ, মেডিসিন বাক্স, আই প্যাচ, কার্পেট, গ্লাভস, লাগেজ, মেডেল, পেপার প্রোডাক্টসহ বিভিন্ন পণ্য।
কুমিল্লা ইপিজেডে তিন ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ক্যাটাগরিতে অর্থাৎ বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ৩০টি, বি ক্যাটাগরির অর্থাৎ যৌথ মালিকানাধীন সাতটি প্রতিষ্ঠান। সি ক্যাটাগরির বা দেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ১১টি। এর মধ্যে রফতানির শীর্ষে রয়েছে পাঁচ প্রতিষ্ঠান। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান এ ক্যাটাগরির মেসার্স কাদেনা স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেড। চীনা মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠান ২০১০ সালে ব্যবসা শুরু করেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ৯১ দশমিক ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি করেছে। এ ছাড়া বেশি রফতানিকারক বাকি চার প্রতিষ্ঠান হলো- সুরতি টেক্সটাইল (বিডি) লিমিটেড, নাসা তেইপ ডেনিমস লিমিটেড, জিংস্যাং সুজ (বিডি) লিমিটেড ও ইস্টপোর্ট লিমিটেড।