
তুলে দেওয়া হচ্ছে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার
- অর্থনীতি
- মার্চ ২০, ২০২৩
আইএমএফ ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা। এমন পরিস্থিতিতে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তুলে দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ ঋণের সুদহার। উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাবে সঞ্চয়প্রবণতা কমায় উচ্চ সুদে আমানত নিতে পারছে না ব্যাংক। ফলে তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিসংক্রান্ত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ সময় ডেপুটি গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে এক কর্মকর্তা জানান, আগামী জুনে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। কেমন মুদ্রানীতি হবে এ বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করার বিষয়ে আইএমএফের শর্ত রয়েছে। এখন যে ৯ শতাংশ ক্যাপ রয়েছে, তা কিভাবে তুলে বাজারব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেওয়া যায়, সেটির কৌশল নির্ধারণে আলোচনা হয়েছে। যেমন লাইবর রেটের সঙ্গে ব্যাংক নির্ধারিত সুদ যোগ করে মোট সুদহার নির্ধারণ কর হয়। ঠিক সেভাবে পাঁচ ধরনের বন্ডের সুদহারের গড় রেটের সঙ্গে একটি রেট নির্ধারণ করে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংকগুলো অনেক দিন ধরেই সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। কেননা ঋণে ৯ শতাংশ সুদের সীমা থাকায় আমানতে সুদ বাড়াতে পারছে না ব্যাংকগুলো। আবার সুদ না বাড়িয়ে ঋণও পাচ্ছে না। আইএমএফের সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও সুদহারের সীমা প্রত্যাহার অথবা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। চলমান মুদ্রানীতির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও আগামী মুদ্রানীতিতে কী কী থাকবে, বৈঠকে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নতুন মুদ্রানীতিতে ব্যাংকঋণের সুদহার কী করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে ব্যান্ডিং ও রেফারেন্সের রেটের কথা ভাবা হচ্ছে। এসব বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামী মুদ্রানীতিতে এসব বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।