তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিলেন এরদোয়ান

অর্থনৈতিক সংকট, ভয়াবহ প্রাণঘাতী ভূমিকম্প ও বিরোধীদের একতা সত্ত্বেও গত ২৮ মে রানঅফ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগলুকে হারিয়ে জয় পান রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। অতঃপর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শনিবার তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন এরদোয়ান। এর মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশটির শাসনভার সামলাতে যাচ্ছেন ৬৯ বছর বয়সী এই নেতা। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও স্থানীয় মুদ্রা লিরার দরপতনের কারণে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন এরদোয়ান। একই সঙ্গে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির আকাঙ্ক্ষা এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনার কারণে তিনি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন বলে মত বিশ্লেষকদের। এসব সংকট থেকে উত্তরণে শপথ নেওয়ার পরই নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন এরদোয়ান।

আংকারার পার্লামেন্ট ভবনের শপথ অনুষ্ঠানে এরদোয়ান বলেন, ‘মহান তুরস্ক জাতির সামনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আমার সম্মান ও সততার শপথ করছি—আমি আমার সব ক্ষমতা ব্যবহার করে তুরস্ক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষা এবং নিরপেক্ষভাবে আমার দায়িত্ব পালন করব।’ শপথ অনুষ্ঠানে আইনের শাসন এবং কামাল আতাতুর্কের শত বছর আগের ধর্মনিরপেক্ষ নীতি থেকে বিচ্যুত না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এরদোয়ান।

গবেষণা সংস্থা বিসিএ রিসার্চের প্রধান ভূ-রাজনৈতিক কৌশলবিদ ম্যাট গার্টকেন বলেন, ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, এই নির্বাচনের ফলে তুরস্কের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অর্জনের সাম্প্রতিক আকাঙ্ক্ষা আরো দৃঢ় হবে।

এই নীতির উদ্দেশ্য হলো পূর্বাঞ্চলীয় ও স্বৈরাচারী রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নেওয়া এবং পশ্চিমা গণতন্ত্রপন্থী দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী ফাটল রোধ করা।

অর্থনৈতিক সংকটে থাকে তুরস্কে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৪৩.৭ শতাংশ। সুদহার কমিয়ে প্রবৃদ্ধি বাড়ানো সংক্রান্ত এরদোয়ানের অপ্রথাগত নীতিই এর জন্য অনেকাংশে দায়ী বলে মত বিশ্লেষকদের। তাই এই উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলাই হবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরদোয়ানের প্রধান অগ্রাধিকার। ইস্তাম্বুলের কাদিও হাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক আল্প ইরিঞ্চ ইয়েলদান বলেন, ‘মনে হচ্ছে এরদোয়ানের সরকার একটি প্রচলিত অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে।’

সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা