পশুখাদ্য খেয়ে চলছে গাজাবাসীর টিকে থাকার সংগ্রাম

পশুখাদ্য খেয়ে চলছে গাজাবাসীর টিকে থাকার সংগ্রাম

লাগাতার শব্দ! কর্ণকুহরে প্রবেশের জন্য বুঝি আর কোনও শব্দ অবশিষ্ট নেই! ওপরে ঘুরপাক খাচ্ছে হেলিকপ্টার গানশিপ, এফ-১৬ বোমারু বিমান থেকে চলে অবিরাম বোমাবর্ষণ, যুদ্ধজাহাজ থেকে ছুটে আসছে মরণঘাতী গোলা! ধ্বংসলীলার গাঢ় অন্ধকার গিলে খাচ্ছে সব।বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, খাবারই বা কোথায়? এমন অমানবিক অবস্থায় গাজার বিচ্ছিন্ন উত্তরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে ব্যাপক খাদ্য সংকট।

সেখানকার শিশুরা কয়েকদিন ধরেই অনাহারে রয়েছে। অনেকেই পশুপাখির খাবার পিষে ময়দা বানিয়ে খাচ্ছে। তবে গাজায় এ ধরনের শস্যেরও মজুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ওই এলাকায় খাদ্য সংকটের পাশাপাশি রয়েছে পানীয় জলেরও অভাব। অনেকেই একটু পানির জন্য মাটি খুঁড়ে পানি সরবরাহের লাইন খুঁজছে। বেশ কিছুদিন ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ত্রাণবাহী গাড়ি ঢুকতে পারছে না। এ কারণেই এলাকাটিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট।

গাজার বেইত লেহিয়ার স্বাস্থ্যকর্মী মাহমুদ শালাবি বিবিসিকে বলেন, ‘‌এতদিন উত্তর গাজার বাসিন্দারা পশুখাদ্য পিষে ময়দা বানিয়ে খেয়েছে। কিন্তু এখন পশুখাদ্যও শেষের পথে। বাজারে এ ধরনের জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে কৌটাজাত খাবারও।’

জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা ওসিএইচএ বলছে, যেসব সংস্থা ত্রাণ বিতরণ করতে চেয়েছে, তাদের বেশির ভাগকেই উত্তর গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজার খাদ্য সংকটের কথা অস্বীকার করেছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সতর্কতার মুখেও রাফায় আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা নেতানিয়াহুর ফিলিস্তিনজুড়ে চলমান মানবিক সংকটের মধ্যে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গাজার দক্ষিণাঞ্চল রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু শরণার্থীতে ভরা এলাকাটিতেও হামলার পরিকল্পনা করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে প্রকাশিত এক বার্তায় রাফায় থাকা হামাসের ব্যাটালিয়নগুলো নির্মূল করার লক্ষ্যের কথা জানান নেতানিয়াহু।

এর আগে রাফা থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেয়ার কথাও বলা হয়েছে নেতানিয়াহুর এক বার্তায়। তবে তার এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে সতর্ক করেছে ইসরায়েলকে। তারা বলেছে, রাফায় ইসরায়েলি অভিযান বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসবে। এছাড়া নেতানিয়াহুর এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)।

রাফা আক্রমণে ভয়াবহতার আশঙ্কার কথা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জানিয়েছেন, ‌গাজার অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা এ এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, রাফায় এ মুহূর্তে অন্তত ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করছে। এ সংখ্যার অধিকাংশই শরণার্থী। তারা ফিলিস্তিনের অন্যান্য এলাকায় যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতেই এখানে আশ্রয় নিয়েছে।

আরও পড়তে পারেন

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কক্সবাজারে নতুন করে আরও প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা…
জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

ঈদুল আজহার আগেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে নতুন ডিজাইনের টাকার নোট, যা দুই টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা মূল্যমান পর্যন্ত…
পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

সৌদি আরব হজ পারমিট সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যারা বৈধ…