
পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর সীমিতভাবে চালু হলো ইন্টারনেট
- দেশীয়
- জুলাই ২৪, ২০২৪
দেশে একটানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। তবে শুরুতে সবাই ইন্টারনেট পাচ্ছেন না; জরুরি সেবা, আর্থিক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমসহ কিছু খাতকে প্রাধান্য দিয়ে ইন্টারনেট চালু হচ্ছে।
রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক সাংবাদিকদের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়ে জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার (গতকাল) রাতের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালু হবে। প্রাথমিকভাবে ব্যাংক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সংবাদমাধ্যমের কার্যালয় ও কূটনৈতিক এলাকায় ইন্টারনেট চালু হবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাত, রপ্তানিমুখী শিল্প খাত, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও হাসপাতালের মতো জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান, রেলওয়ে, প্রবাসীকল্যাণ সেবা এবং এয়ারলাইনস সেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় থাকা এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে। এরপর এলাকার পরিধি বাড়ানো হবে। খুব দ্রুত সার্বিকভাবে পুরো ইন্টারনেট সেবা চালু হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালুর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিষয়টি এখনো আমি নিশ্চিত বলতে পারছি না যে কতটুকু আমরা আসলে অ্যালাউ (অনুমোদন) করতে পারব। এ পর্যায়ে ইন্টারনেটকে আগে পুনঃস্থাপন করি। আগামীকাল (আজ বুধবার) বলি, পরের অবস্থান কী।’
এর আগে ১৭ জুলাই (বুধবার) রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাত ৯টার দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ হিসেবে ১৮ জুলাই এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, জাতীয় ও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
পাঁচ দিন ইন্টারনেট না থাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল, অনলাইনে টাকা লেনদেন, মুঠোফোনে টাকা ভরা, অনলাইনে কেনাবেচা, ফ্রিল্যান্সিং, বিমানের টিকিট কেনা, অনলাইনভিত্তিক বিনোদনের মাধ্যম (ওটিটি, ইউটিউব প্রভৃতি) ও পড়াশোনা—সব সেবাই হয় বন্ধ রয়েছে কিংবা বিঘ্নিত হয়েছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে সমস্যায় পড়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) জানিয়েছে, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকার কারণে পাঁচ দিনে সফটওয়্যার খাতের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে।
এরপর গতকাল রাতে সীমিত পর্যায়ে ইন্টারনেট চালু করা হলো। জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, সরকার এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করেছিল। কতটা সফল হয়েছিল, সেটি সবাই জানেন। তবে টানা পাঁচ দিন ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে, তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। আইসিটি খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবার বিষয়টি এখন বিবেচনায় আসবে। অনেক ব্যবসায়ী গ্রাহকের আস্থা হারাবেন।