প্রায় তিন মাস ধরে ইয়াংগুন-টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ

প্রায় তিন মাস ধরে ইয়াংগুন-টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ

প্রায় তিন মাস ধরে মিয়ানমারের জান্তা সরকার ইয়াংগুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর হয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এই স্থবিরতার পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বাধা। এর ফলে সরকার রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ক্ষতির মুখে পড়েছে—গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৪৭ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ।

তবে পুরোপুরি বন্ধ না থাকলেও, রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার সঙ্গে সীমিত পরিসরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম এখনও চালু রয়েছে। টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার জানান, ১৬ জানুয়ারি ইয়াংগুন থেকে পণ্যবাহী ট্রলার নাফ নদী হয়ে টেকনাফে আসার সময় আরাকান আর্মি সেটি আটকে দেয়। যদিও পরবর্তীতে ট্রলারগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়, কিন্তু এরপর থেকে নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে (১০ এপ্রিল পর্যন্ত) ইয়াংগুন থেকে আর কোনও ট্রলার টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসেনি। তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে শুধুমাত্র মংডুর সঙ্গে স্বল্পমাত্রায় আমদানি-রফতানি চালু রয়েছে, তবে সামগ্রিকভাবে স্থলবন্দরের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়।”

বন্দর শ্রমিকরা জানান, রাখাইন রাজ্যের আরাকান আর্মির কারণে ইয়াংগুন থেকে কোনও পণ্যবাহী ট্রলার আসছে না। বন্দর অনেকটা অচল রয়েছে। ফলে বেকার সময় পার করতে হচ্ছে তাদের।

বন্দরের কাস্টম কর্মকর্তারা জানায়, গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৯৫৭ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। এর বিপরীতে সরকার ১০৮ কোটি ২৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩১২ টাকা রাজস্ব পায়। গেলো অর্থ বছরের (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে ২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ৫৯ হাজার ৯৬৮ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। যার ফলে সরকার ৩৫৬ কোটি ৫১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৭২৩ টাকা রাজস্ব পায়। রাখাইনে যুদ্ধের প্রভাবে গত বছরের তুলনায় ২৪৭ কোটি ২৭ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪১১ টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। ইয়াংগুনের সাথে টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও চালু রয়েছে মংডুর সাথে। গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৯ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা দামের ৭ হাজার ১১৭ টন বিভিন্ন পণ্য রফতানি হয়েছে। গেলো অর্থ বছরের (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে ২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পওয়া ২ দশমিক ৪১ কোটি টাকা দামের ৬৯১ মেট্রিক টন পণ্য রফতানি হয়।

এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দর রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সোহেল উদ্দিন বলেন, ‘আরাকান আর্মি সীমান্ত দখলের পর প্রায় তিন মাস ধরে ইয়াংগুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। যার কারণে রাজস্ব ধস নেমেছে। তবে রাখাইন রাজ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি-রফতানি চলমান রয়েছে।’

আরও পড়তে পারেন

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কক্সবাজারে নতুন করে আরও প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা…
জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

ঈদুল আজহার আগেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে নতুন ডিজাইনের টাকার নোট, যা দুই টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা মূল্যমান পর্যন্ত…
পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

সৌদি আরব হজ পারমিট সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যারা বৈধ…