
প্লাস্টিক খেকো সুপার এনজাইমের খোঁজ গবেষকদের
- পরিবেশ
- অক্টোবর ১৮, ২০২৩
জীবাশ্ম জ্বালানি বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে রাসায়নিক উপায়ে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় প্লাস্টিক। নমনীয় ক্ষয়রোধী, দীর্ঘস্থায়ী ও দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় প্লাস্টিকের তৈরি পণ্য মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে সাগরের তলদেশ থেকে মাউন্ট এভারেস্ট পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বত্র, এমনকি মেরু অঞ্চলেও প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই পৃথিবীর মাটি, পানি, বায়ুমণ্ডল, বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও মানব স্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এই প্লাস্টিক দূষণ।
এই দূষণ থেকে বাঁচতে জার্মানির লাইপসিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা একটি এনজাইম খুঁজে পেয়েছেন, যেটি রেকর্ড সময়ে প্লাস্টিক ধ্বংস করতে পারে। ১৬ ঘণ্টায় পিইটি প্লাস্টিকের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ধ্বংস করতে পারে এটি। তবে এই প্রক্রিয়া কার্যকর করতে একে ৬০ থেকে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করতে হয়। লাইপশিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট ক্রিস্টিয়ান জনেনডেকারের দল বিশ্বাস করে, প্লাস্টিক সমস্যা সমাধানের মূল চাবিকাঠি হতে পারে বায়োটেকনোলজি। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি কিভাবে কাজ করে সেটা আমরা দেখি এবং তারপর সেটা কপি করি। প্রকৃতি এনজাইম ব্যবহার করে পলিমার ধ্বংস করে। আমরাও সেটাই করছি।’
লাইপশিসের অন্যতম এক প্রধান কবরস্থানের কম্পোস্টের স্তূপে এই এনজাইম খুঁজে পেয়েছিলেন তারা। জনেনডেকার বলেন, ‘পাতায় মোমের আবরণের মতো কিছু থাকে। কিউটিন পলিয়েস্টারের কারণে এমনটা মনে হয়। কিউটিন একটি পলিমার, যা এস্টার বন্ধনীর মাধ্যমে তৈরি হয়। পিইটিও তাই৷ অনেক বায়োপ্লাস্টিকের ক্ষেত্রেও বিষয়টা এমন। এনজাইম বিভিন্ন ধরনের পলিয়েস্টার চিনতে ও ভেঙে ফেলতে পারে, যা একটা সুবিধা। প্লাস্টিক সমস্যার একটা বায়োলজিক্যাল সমাধান পেয়ে আমরা খুশি।’
জনেনডেকারের দল এখন পরবর্তী ধাপে কাজ করছে। তারা এনজাইমের ডিএনএ পরিবর্তন করতে চান, যেন এটি আরো দ্রুত প্লাস্টিক খেয়ে ফেলতে পারে। এর জন্য তারা অনেকগুলো পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছেন। প্রতিটি সংস্করণ তারা আলাদাভাবে পরীক্ষা করে দেখছেন। এভাবে তারা পরবর্তী গবেষণার জন্য সবচেয়ে কার্যকরটি বাছাই করছেন। তারা আধুনিক প্রযুক্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও সহায়তা নিচ্ছেন।
গবেষকেরা প্রতিদিন হাজার হাজার এনজাইম পরীক্ষা করে সুপার এনজাইমের খোঁজ করছেন। প্লাস্টিক বর্জ্য টেকসইভাবে রিসাইক্লিং করতে তারা বড় লক্ষ্য নিয়ে আগাচ্ছেন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে