
ব্যবসার পরিবেশে সন্তুষ্ট নয় ৭১% জাপানি কোম্পানি
- শিল্প বানিজ্য
- আগস্ট ৩১, ২০২৩
৭০ দশমিক ৮০ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। তারা জানিয়েছে, ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হলে আগামীতে বাংলাদেশে তারা ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী।
জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বছরের আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত এ জরিপে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এমন ৭৪টি কোম্পানি তাদের মতামত দিয়েছে।
বুধবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) ঢাকা এবং জেট্রো আয়োজিত আলোচনা সভায় জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, ২৬ দশমিক ২ শতাংশ জাপানি কোম্পানি বলেছে, বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশে তারা অসন্তুষ্ট। ৪৪ দশমিক ৬ শতাংশ জানিয়েছে, তারা কিছুটা অসন্তুষ্ট। ব্যবসা পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি আছে এমন কোম্পানি ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।
রাজধানীর গুলশানে এমসিসিআই এবং জেট্রো আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিঞা। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও জেট্রোর জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে থাকা জাপানি কোম্পানিগুলোর ৭১ দশমিক ৬০ শতাংশ আগামী এক থেকে দুই বছরে ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী। জাপানি ব্যবসায়ীদের এমন মনোভাবের ক্ষেত্রে এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। জাপানি কোম্পানিগুলোর ৭২ শতাংশ ভারতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যবসায় ঝুঁকির দিক বিবেচনায় সরকারি লাইসেন্স বা অনুমোদন, বিনিয়োগের অনুমতি, কর সম্পর্কিত বিষয় এবং ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বলে মনে করে জাপানি কোম্পানিগুলো।
জরিপের তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশে জেট্রোর প্রতিনিধি ইউজি আন্দো ব্যবসার পরিবেশের উন্নতির আহ্বান জানান। পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স ব্যবস্থা সহজ ও দ্রুত করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর হলে তা উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় ব্যবসার উন্নতিতে সহায়তা করবে।
আলোচনায় বক্তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ব্যবসায় পরিবেশ উন্নত হলে এবং বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হলে ২০৩০ সালের মধ্যে জাপানে বাংলাদেশের রপ্তানি ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মুনাফা নিজ দেশে নিতে আইনি ব্যবস্থা আরও সহজ করা দরকার বলে মত দেন তারা।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি ব্যবসা পরিবেশের উন্নতির জন্য সরকারি-বেসরকারি যৌথ সংলাপ আয়োজনে একটি কর্মকৌশল গ্রহণের ওপর জোর দেন। বাংলাদেশে তাঁর দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।