
ব্লু-টুথ ও ওয়াই-ফাই একসাথে নিয়ারলিংকে
- প্রযুক্তি
- অক্টোবর ৯, ২০২৩
চীনের ওপর পশ্চিমাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার সংখ্যা বেড়েই চলছে। শুরু থেকেই চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে হয়ে আছে ওয়াশিংটনের চক্ষুশূল। এমন বাস্তবতায় হুয়াওয়ে নিয়ে এসেছে নিয়ারলিংক। ব্লু-টুথের মতো স্বল্প দূরত্বে নানা ডিভাইসের সঙ্গে সংযোগ তৈরি, ওয়াই-ফাইয়ের মতো ডাটা ট্রান্সফার এবং ইন্টারনেট সংযোগ হিসেবে কাজ করা—সবই করা যাবে নিয়ারলিংকে।
ওয়াই-ফাই ও ব্লু-টুথ প্রযুক্তির লাইসেন্স বেশ কিছু দেশ মিলে তৈরি কনসোর্টিয়াম দিয়ে থাকে, যার সদস্য হুয়াওয়েও। তবে প্রযুক্তিগুলোর গবেষণায় হুয়াওয়ের কাজ বন্ধ করা হয়েছে আরো আগেই। তারা শুধু সেগুলো ব্যবহার করে ডিভাইস তৈরি করতে পারবে।
এ অবস্থায় হঠাৎ একদিন সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হবে না তার গ্যারান্টি নেই। হুয়াওয়ে তাই ব্লু-টুথ ও ওয়াই-ফাইয়ের বদলে ব্যবহার করার মতো নিজস্ব প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। শুরুতে সেটার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গ্রিন-টুথ’, পরে তা বদলে দেওয়া হয় ‘নিয়ারলিংক’।
ব্লু-টুথের মতো স্বল্প দূরত্বে নানা ডিভাইসের সঙ্গে সংযোগ তৈরি, ওয়াই-ফাইয়ের মতো ডাটা ট্রান্সফার এবং ইন্টারনেট সংযোগ হিসেবে কাজ করা—সবই করা যাবে নিয়ারলিংকে। হুয়াওয়ের দাবি, এই প্রযুক্তি ব্লু-টুথের চেয়ে ব্যাটারিসাশ্রয়ী এবং একই চিপে ইয়ারফোন থেকে রাউটার—সবই সংযুক্ত থাকায় ফোনের ওপর চাপও কম পড়বে।
তারা এটাও জানিয়েছে, ব্লু-টুথের অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ারলিংক কাটিয়ে ফেলবে। ১০০টির বেশি ডিভাইস এক নিয়ারলিংক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকতে পারবে, তাই আইওটি ও স্মার্টহোম তৈরিতেও নিয়ারলিংক কাজে লাগানো যাবে। অচিরেই তারা এই প্রযুক্তির লাইসেন্স উন্মুক্ত করবে, যাতে অন্য নির্মাতারাও নিয়ারলিংক সমর্থিত ডিভাইস তৈরি করতে পারে।
ভবিষ্যতে ইউএসবি-সি পোর্ট ও এনএফসি প্রযুক্তিরও বিকল্প তৈরির সম্ভাবনা আছে তাদের, কেননা এই প্রযুক্তিগুলোর লাইসেন্সও পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকেই তাদের নিতে হচ্ছে।
নিয়ারলিংকের আগেও হুয়াওয়ে পশ্চিমা প্রযুক্তির বিকল্প নিয়ে গবেষণা করেছে। তাদের কিরিন প্রসেসরগুলো তার উজ্জ্বল উদাহরণ। এ ছাড়া মাইক্রোএসডি কার্ডের বদলে ন্যানোমেমোরি বা এনএম কার্ড তৈরি করেছে তারা। কোয়ালকমের অ্যাপ্টএক্স বা সনির এলডিএসি কোডেকের বদলে নিজস্ব এইচডাব্লিউএ ও এলএইচডিসি কোডেক তৈরি করেছে তারা। এর বাইরেও নানা স্মার্টফোন ও মোবাইল নেটওয়ার্কজনিত আট হাজারের বেশি প্রযুক্তির পেটেন্ট করেছে হুয়াওয়ে। সব মিলিয়ে বলা যায়, সহজেই নিষেধাজ্ঞার সামনে মাথানত করছে না চীনা প্রতিষ্ঠানটি।