রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণও খেলাপি হচ্ছে

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণও খেলাপি হচ্ছে

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে নেওয়া ঋণ ফেরত দেয়নি থার্মেক্স গ্রুপ। বাধ্য হয়ে বিদেশি মুদ্রার ঋণটিকে ফোর্সড লোনে রূপান্তর করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক। সময়মতো ঋণ ফেরত না দেওয়ায় রূপালী ব্যাংকে ঋণখেলাপি হয়ে পড়ে শিল্প গ্রুপটি। এখানেই শেষ নয়। সেই ঋণ বিশেষ বিবেচনায় পুনঃতফসিল করে দায় পরিশোধের সময় বৃদ্ধি করেছে রূপালী ব্যাংক।

প্রসঙ্গত, ইডিএফ পুরোটাই রিজার্ভের টাকায় গঠিত। এর আগে খেলাপির দায়ে রাষ্ট্রায়ত্ত আরও একটি ব্যাংকের ইডিএফ সুবিধা বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বড় একটি শিল্প গ্রুপ ব্যাংকটিতে ইডিএফ ঋণ খেলাপি।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানিকারকদের সহায়তায় গঠন করা ইডিএফ ফান্ডের আকার বাড়তে বাড়তে ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলারে পৌঁছালেও আইএমএফের চাপে তা কমিয়ে ৪ দশমিক ১০ বিলিয়নে (৪১০ কোটি) নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু যারা এ ফান্ড থেকে ঋণ নিয়েছে তাদের অনেকেই ফেরত দিতে পারছে না মার্কিনি মুদ্রায় নেওয়া এসব ঋণ। এতে বিপাকে পড়েছে রূপালীসহ আরও কিছু ব্যাংক।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রিজার্ভ থেকে গঠিত ইডিএফ থেকে থার্মেক্স গ্রুপকে ৬৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে রূপালী ব্যাংক। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও তা শোধ দিতে পারেনি গ্রুপটি। বাধ্য হয়ে থার্মেক্স গ্রুপের নামে সুদে আসলে মোট ৭১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ফোর্সড লোন সৃষ্টি করেছে ব্যাংকটি। বর্তমানে মাসিক কিস্তিতে আগামী ছয় মাসে এই ঋণ পরিশোধের আবেদন করেছে থার্মেক্স।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি চেয়েছে রূপালী ব্যাংক। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এই ৭১ কোটি ৭৩ লাখ এবং থার্মেক্স গ্রুপের অপর সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিস্টার ডেনিম কম্পোসিট লিমিটেডের নামে নেওয়া ১৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে দিতে না পারলে মন্দমানে খেলাপি করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ এই ঋণগুলোর মাধ্যমে রূপালী ব্যাংকের একক গ্রাহক ঋণসীমা অতিক্রম করেছে থার্মেক্স। অর্থাৎ মূলধনের ২৫ শতাংশ (ফান্ডেড-ননফান্ডেড) অতিক্রম করেছে।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, রূপালী ব্যাংক থেকে থার্মেক্স গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার আশপাশে ছিল। কিন্তু এতদিন একক গ্রাহক ঋণসীমা অতিক্রম করেনি। নতুন করে ৮৩ কোটি ৭৯ লাখ (৬৬.২৭ ও ১৭.৫২) টাকা যুক্ত হয়ে ঋণের সমষ্টি একক গ্রাহক ঋণসীমা অতিক্রম করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী যা অনৈতিক এবং অনিয়ম।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, কোনো ব্যাংক যদি আইন লঙ্ঘন করে তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিশ্চয় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর ইডিএফের ঋণখেলাপি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে কোনো প্রভাব পড়ে না। কারণ নির্ধারিত সময় শেষে ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই টাকা কেটে নেয়। এখন কোনো ব্যাংক যদি অন্যায়ভাবে ফোর্সড লোন তৈরি করে, সেই ঋণ খেলাপি হয়ে যায় এবং নীতিবহির্ভূতভাবে পুনঃতফশিল করে তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আরও পড়তে পারেন

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কক্সবাজারে নতুন করে আরও প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা…
জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

ঈদুল আজহার আগেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে নতুন ডিজাইনের টাকার নোট, যা দুই টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা মূল্যমান পর্যন্ত…
পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

সৌদি আরব হজ পারমিট সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যারা বৈধ…