
‘লেনদেন ভারসাম্য নিয়ে মাঝারি ঝুঁকিতে বাংলাদেশ’
- শিল্প বানিজ্য
- নভেম্বর ১২, ২০২৩
দেশে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে লেনদেন ভারসাম্য বা ব্যালান্স অব পেমেন্ট (বিওপি) নিয়ে বাংলাদেশের মাঝারি মাত্রার ঝুঁকি আছে বলে মনে করছে বৈশ্বিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিস।
মুডিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যালান্স অব পেমেন্টের সংকটে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা মাঝারি মানের। শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার মোট চারটি দেশের কথা উল্লেখ করেছে মুডিস, যারা এ ধরনের সংকটে পড়তে পারে। চারটি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। চতুর্থ যে দেশটি এই সংকটে পড়তে পারে সেটি হলো ভারত।
মুডিস বলছে, বাংলাদেশের বাজার অতটা উন্মুক্ত নয়, রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য তেমন একটা নেই; তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতির দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি। এসব কারণে দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে রিজার্ভ বা বিদেশি মুদ্রার মজুত ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে, যদিও ২০২১ সালের আগস্ট মাসে দেশের রিজার্ভ ছিল ৪০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত ১৮ মাসে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি, বিশ্ববাজারে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার কারণে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।
আগামী কিছুদিনের মধ্যে রিজার্ভ বাড়বে, তেমন সম্ভাবনাও নেই। যেসব কারণে রিজার্ভ কমেছিল, সেই সব কারণ এখনো বিদ্যমান।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ঝুঁকি সবচেয়ে কম। মুডিস বলছে, দেশটির অর্থনীতি বৈচিত্র্যপূর্ণ; রপ্তানি খাতও বেশ বড়। দেশটির সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাও ভালো; সে জন্য তাদের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও ভালো।
মুডিসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার রপ্তানি খাত ছোট হওয়ার কারণে তাদের ব্যালান্স অব পেমেন্টের সংকটে পড়ার আশঙ্কা বেশি।
ভারত তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকলেও বাজার আরও উন্মুক্ত না করলে তারাও বিপদে পড়তে পারে। মুডিস বলছে, বাজার আরও না মুক্ত না করলে দীর্ঘ মেয়াদে ভারতের প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে; তখন তারা ক্রমবর্ধমান তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে বিপদে পড়তে পারে।
পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে বলে মনে করে মুডিস। তাদের ভাষ্য, তৈরি পোশাক খাতে অবস্থান ভালো থাকায় রপ্তানিতে এদের চেয়ে ভালো পরিস্থিতিতে আছে বাংলাদেশ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে অন্যান্য দেশের খুব একটা উন্মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই। সে কারণে বৃহত্তর বাজারের সুবিধা তারা তেমন একটা পায় না। সেই সঙ্গে তাদের বাজার অতটা উন্মুক্ত নয়, তাই দীর্ঘ মেয়াদে তাদের প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব পড়তে পারে।
পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং ভারতের ঋণমান অপরিবর্তিত রেখেছে মুডিস: বাংলাদেশের ঋণমান বি১-এ স্থিতিশীল রাখা হয়েছে; ভারতে বিএএ৩-এ স্থিতিশীল; পাকিস্তানের সিএএ৩-এ স্থিতিশীল ও শ্রীলঙ্কার সিএ স্থিতশীল।
এর আগে গত মে মাসে মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ৩ থেকে বি১ করে।