হিমালয়ের বরফ গলছে হু হু করে, অনিশ্চয়তায় ১০ নদীর ভবিষ্যৎ

হিমালয়ের বরফ গলছে হু হু করে, অনিশ্চয়তায় ১০ নদীর ভবিষ্যৎ

হিমালয় পর্বতমালা তিব্বতীয় মালভূমি থেকে ভারতীয় উপমহাদেশকে পৃথক করেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, চীন, নেপাল ও ভুটান এশিয়ার এই ছয় দেশে বিস্তৃত হিমালয়ের বরফ গলে যাচ্ছে হু হু করে। গলনের তেজ এতটাই যে, একের পর এক হিমবাহ উধাও হয়ে যাচ্ছে। এই সংক্রান্ত বিভিন্ন সমীক্ষার রিপোর্ট দেখে বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তাঁদের দাবি, গত দশকে অর্থাৎ ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে হিমালয়ের বরফ যে গতিতে গলেছে, তা পূর্ববর্তী দশকের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ, বরফ গলনের গতি এক দশকে ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে পাহাড় পর্বতে জমে থাকা বরফ গলবে, এতে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। বরং, বরফ গলে যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু হিমালয়ের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি সবচেয়ে চিন্তার, তা হল গলনের এই গতি। এত দ্রুত এত বরফ হিমালয় থেকে গলে যাবে, তা আশা করেননি কেউ। এ বিষয়ে এখন থেকেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।

হিন্দুকুশ হিমালয়ের হিমবাহগুলি সরাসরি অন্তত ২৪ কোটি মানুষের প্রতি দিনের প্রয়োজনীয় জলের ঘাটতি মেটায়। এ ছাড়া, বিভিন্ন নদী উপত্যকায় বসবাসকারী আরও অন্তত ১৬৫ কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে এই হিমবাহগুলির উপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ দেখে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই শতাব্দীর শেষে হিমালয়ের হিমবাহগুলি ৮০ শতাংশ আয়তন হারাবে। তাতে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে ওই এলাকা থেকে উৎপন্ন অন্তত ১০টি প্রধান নদী এবং তাদের যাবতীয় উপনদী ও শাখানদী।

গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র, মেকং, ইয়েলো, ইরাবতীর মতো ভারত ও চিনের বহু গুরুত্বপূর্ণ নদীর জলের উৎস হিমালয়ের হিমবাহ। সেগুলি গলে গেলে এই নদীতে প্লাবন দেখা দেবে। নদীর উপত্যকায় বসবাসকারী বহু মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠবে তাতে। উপত্যকার বাসিন্দাদের শুধু বাসস্থান নয়, খাবার, বিদ্যুৎ প্রভৃতি একাধিক প্রাথমিক চাহিদা মেটে নদীর জল থেকেই।

নেপালের ইন্টারন্যাশানাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২১০০ সালের মধ্যে হিমালয়ের হিমবাহের পরিমাণ দাঁড়াবে এক তৃতীয়াংশ। হিমবাহ অর্ধেক হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয়। উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বের তাপমাত্রা সার্বিক ভাবে ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণেই বিশ্বের নানা প্রান্তে আগের চেয়ে বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। বেড়েছে তাপপ্রবাহের মাত্রাও। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য পদক্ষেপ করতে হবে, মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

 

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

আরও পড়তে পারেন

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

নতুন আরও পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১ মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কক্সবাজারে নতুন করে আরও প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা…
জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

জুনের প্রথম দিকেই আসছে নতুন নোট

ঈদুল আজহার আগেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে নতুন ডিজাইনের টাকার নোট, যা দুই টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা মূল্যমান পর্যন্ত…
পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

পারমিট ছাড়া হজ পালনে কঠোর ব্যবস্থা ঘোষণা সৌদি আরবের

সৌদি আরব হজ পারমিট সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যারা বৈধ…